
গত রবিবার দুপুরে হাইকোর্ট আদেশ দেয়ার পর ওইদিন সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দফতরে পৌঁছে আদেশের কপি। পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) হাসান মাহমুদ খন্দকার ইত্তেফাককে জানিয়েছেন, আদালতের আদেশের কপি তিনি পেয়েছেন। গতকালই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপারের কাছে আদেশের কপি পাঠানো হয়েছে।
গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কপি পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এসে পৌঁছে। নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন আদেশের কপি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, 'আদেশের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।' রাত ১১টায় এসপি বলেন, 'তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে এমন কোন তথ্য আমার কাছে নেই।'
৭ খুনের ঘটনায় র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাকে গ্রেফতারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে রবিবার দুপুরে আইজিপিকে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। দণ্ডবিধি বা বিশেষ ক্ষমতা আইনে তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাওয়া না গেলে তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করতে নির্দেশ দেয় আদালত। যাদের গ্রেফতার করতে বলা হয়েছে তারা হলেন র্যাব-১১ এর সাবেক কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মাহমুদ, সাবেক মেজর আরিফ হোসেন ও সাবেক লে. কমান্ডার এম এম রানা।
সূত্র জানিয়েছে, লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মাহমুদ ও মেজর আরিফ হোসেন ক্যান্টনমেন্টে নজরদারির মধ্যে থাকলেও অপর কর্মকর্তা লে. কমান্ডার এম এম রানার কোন সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। গত ৬ মে রানাকে চাকরি থেকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়ার পর তিনি গ্রামের বাড়ি যান। তার বাড়ি নরসিংদীর রায়পুরা। এরপর আর তার কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। নৌ বাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে, কাউকে অবসরে পাঠানো হলে নৌ বাহিনী তার ব্যাপারে কোন খোঁজ-খবর রাখে না। তাই রানা কোথায় আছে সে ব্যাপারে তারা কিছু জানেন না।
নূর হোসেনের ২ সহযোগী গ্রেফতার
সাত খুনের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত নূর হোসেনের অন্যতম সহযোগী রফিকুল ইসলাম রতনকে গতকাল সন্ধ্যায় সিদ্ধিরগঞ্জের আজিবপুর এলাকায় নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি বাংলাদেশ ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের শিমরাইল শাখার সাধারণ সম্পাদক। নূর হোসেন ওই সমিতির সভাপতি। নূর হোসেনের অবৈধ অনেক ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন রফিকুল ইসলাম রতন। এর আগে গতকাল সকালে রাজধানীর কদমতলীর দক্ষিণ দনিয়া থেকে তার আরেক সহযোগী রাসেল আলীকে ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি মূলত নূর হোসেনের মাদক সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্য। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক রবিউল ইসলাম বলেন, গোপন খবরের ভিত্তিতে গতকাল সকাল সাড়ে ৮টার দিকে দক্ষিণ দনিয়ার দাসপাড়ার ১ হাজার ৪৩৫ নম্বর বাসায় অভিযান চালানো হয়। সেখানে দুই কক্ষের একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন রাসেল আলী। অভিযানে তাকে গ্রেফতার এবং বাসায় তল্লাশি চালিয়ে ২৫ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়।
নূর হোসেনের লাশের গুজবে ধলেশ্বরীতে তল্লাশী
নারায়ণগঞ্জের ৭ খুনের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত নূর হোসেনের লাশ ধলেশ্বরী নদীতে—এমন গুজবের ভিত্তিতে ব্যাপক তল্লাশী চালিয়েছে পুলিশ। মুন্সীগঞ্জ সদর থানা পুলিশের একাধিক টিম ৩টি ইঞ্জিনচালিত ট্রলার নিয়ে নারায়ণগঞ্জ বন্দর ও মুন্সীগঞ্জের সীমান্ত এলাকায় শীতলক্ষ্যা ও পুরো ধলেশ্বরী নদীতে তল্লাশি শুরু করে। এ সময় বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও সংবাদ সংগ্রহে ধলেশ্বরী নদী ও আশপাশ এলাকায় খোঁজখবর নিতে ভিড় জমান।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শহীদুল ইসলাম রাত ৯টার দিকে সাংবাদিকদের জানান, লোকমুখে ধলেশ্বরী নদীতে নূর হোসেনের লাশ উদ্ধারের খবর শুনে পুলিশ তল্লাশি শুরু করে। কিন্তু সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ৩ ঘণ্টা ধরে শীতলক্ষ্যা, ধলেশ্বরী ও মেঘনা নদীর মোহনা পর্যন্ত ৩টি ইঞ্জিনচালিত ট্রলার নিয়ে পুলিশের একাধিক টিম তল্লাশি চালালেও নূর হোসেন বা অন্য কারো লাশের হদিস পাওয়া যায়নি। ওসি আরো জানান, লাশ উদ্ধারের খবর একেবারেই গুজব।
0 comments:
Post a Comment